নিজস্ব প্রতিবেদক: রোজিনা ইসলাম রোববার বিকেল নাগাদ মুক্তি পেতে পারেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তার আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার। তিনি বলেন, আদেশের নথিতে বিচারকের স্বাক্ষর হওয়ার পর যথাযথ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। এরপর সব কাগজপত্র যাবে কারাগারে। তখন মুক্তি পাবেন রোজিনা ইসলাম। আমরা ধারণা করছি, বিকেল নাগাদ মুক্তি পেতে পারেন তিনি।
রোববার সকাল পৌনে ১১টার দিকে পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকা এবং পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা ইসলামের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ। তার বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রীয় গোপন নথি চুরির’ অভিযোগে অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনে গত ১৭ মে শাহবাগ থানায় মামলা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে জামিন দেওয়ার আগে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ এক পর্যবেক্ষণে বলেন, সাংবাদিক রোজিনাকে আরও দায়ীত্বশীল হতে হবে। তাকে পেশাগত দায়িত্বপালনে আরও সতর্ক হয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি এও বলেন, গণমাধ্যমের কারণে সব প্রতিষ্ঠানকে আরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হয়। গণমাধ্যম ও গণতন্ত্র একে অপরের অনুষঙ্গ। আদালত ও গণমাধ্যম একে অপরের বাধা হিসেবে কাজ করে না। বরং পরিপূরক হিসেবে কাজ করে।
এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মেট্রোপলিটন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুল্লাহ আবু বলেন, আমরা আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আদালত রোজিনা ইসলামের পাসপোর্ট বা মুচলেকা নিয়ে যদি জামিন দেন, তাহলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য গত সোমবার রোজিনা সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে বেলা ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় তাকে একটি কক্ষে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত ৯টার দিকে তাকে সচিবালয় থেকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাতেই রোজিনার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পরের দিন মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রোজিনার বিরুদ্ধে পুলিশের করা রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে জামিন শুনানির জন্য ২০ মে বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়। জামিন আবেদনের শুনানি গ্রহণ করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী শুনানিতে দুই পক্ষের আইনজীবীরা ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন। তবে আদালত সেদিন তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি।
এদিকে রোজিনার বিরুদ্ধে করা মামলাটির তদন্তভার গত বুধবার পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। এখন ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা শাখা এ মামলা তদন্ত করছে।
Leave a Reply